আশা, ১৭ বছর বয়সী মেয়ে
আশার জীবন সম্পর্কে
আশা তার মা, সৎবাবা আর তার ৮ বছর বয়সী ভাইয়ের সঙ্গে হাজারীবাগে বাস করে। তার বড় ভাই আর বোন দুইজনেরই বিয়ে হয়ে গিয়েছে, তারা অন্যত্র থাকে।
আশার বিয়েও খুব শীঘ্রই হয়ে যাবে। ঈদের পরেই তার বিয়ের তারিখ পড়বে। হবু স্বামীর সঙ্গে আশার অনলাইনে পরিচয় হয়েছে, চার মাস ধরে তারা পরস্পরকে চেনে। সে চায় বিয়ে তাড়াতাড়ি হয়ে যাক যাতে যে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে পারে। তার সৎ-বাবা খুব উগ্র, তিনি আশা আর তা মাকে গালিগালাজ করেন। আশার বোনপালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে রংপুরে চলে যাওয়ার পর থেকে তার সঙ্গে পরিবারটির আর কোনও যোগাযোগ নেই। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার জন্য বিয়ে করাই একমাত্র উপায় বলে আশা মনে করে। সারাদিনে সে একাধিকবার তার হবু স্বামীর সঙ্গে চ্যাট করে।
আশার জন্ম হাজারীবাগে, সেখানেই সে বড় হয়ে উঠেছে। চার বছর আগে তার বয়স যখন ১৩ বছর ছিল তখন সে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়, তখন তার পরিবার হেমায়েৎপুরে চলে এসেছিল, কারণ তার সৎ-বাবা যে কারখানায় কাজ করতেন সেটিও সেখানেই চলে আসে।
শীঘ্রই আশার বিয়ে হয়ে যাবে (বয়স ১৭ বছর)
“কারখানার লোকজনদের মধ্যে আমি নিজেকে নিরাপদ মনে করি। আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের খেয়াল রাখি, তাই এখানকার কাজের পরিবেশ ভাল। সম্মান পাওয়ার আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।”
যে জায়গায় একটা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন
পরিবারটি হেমায়েৎপুরে চলে আসার পরে আশা আর স্কুলে ভর্তি হয়নি। প্রথম দিকে এর কারণ ছিল আর্থিক সমস্যা, তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সঙ্গতি বৃদ্ধি পেলেও আশার পড়াশোনা করাটা অগ্রাধিকার পায়নি।
তাদের বাড়ির আশে পাশের রাস্তাগুলিকে আশা আর তার পরিবার বিপজ্জনক বলে মনে করে, সেগুলি শিল্পের এবং গার্হস্থ্য বর্জ্য পদার্থে অত্যন্ত দূষিত। আশাদের বাড়ির কাছেই একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল, আশাকেও প্রতিদিনই ছেলেরা যৌন হয়রানি করে।
আশার সৎ-বাবা মাছের আঁশ পরিবর্তন করার একটি কারখানায় কাজ করেন এবং প্রতি মাসে ১৩০০০ BDT (US$১১৮) উপার্জন করেন। তিনি পলিথিনের ব্যাগও বিক্রি করেন, তার থেকে প্রতিমাসে তার ৫০০০ BDT (US $45) অতিরিক্ত উপার্জন হয়। আশার মা বাসাবাড়িতে কাজ করতেন, তবে কোভিড অতিমারী শুরু হওয়ার পরে আর কাজ করেননি।
আশা মাসে 8,000 BDT (US $73) উপার্জন করে, তার থেকে সে একটা অংশ তার মাকে দেয়। আশার বক্তব্য অনুযায়ী পরিবারটির মাসিক ব্যয় 20,000 BDT (US $১৮২) থেকে ২২০০০ BDT (US $২০০)-এর মধ্যে হয়। তার ভাইয়ের স্কুলের মাসিক ফি হল ৭০০ BDT (US $৬). প্রতি মাসে আশার বাবার টিউবারকিউলোসিসের চিকিৎসা বাবদ পরিবারটির ১৫০০ BDT (US $১৪) ব্যয় হয়, এবং তার মায়ের পান খাওয়ার (পান-সুপারি চিবানো, যেটি ক্যাফিনের মতো একটি উত্তেজক নেশা) জন্যও একই পরিমাণ ব্যয় হয়। এর ফলে তার কোনও অর্থ সাশ্রয় করতে পারে না।
‘খালের পানি এতোটাই দুষিত যে তা কালো হয়ে গিয়েছে’
আশার এলাকার দূষিত খাল
কারখানায় এক সারি সেলাই মেশিন
আশা তার কর্মস্থলে
আশা একটা চামড়ার কারখানায় একটি বৈদ্যুতিক সেলাই মেশিনে ব্যাগ সেলাইয়ের কাজ করে। সে বিগত ছয় সপ্তাহ ধরে এই কারখানায় কাজ করছে। এর আগে সে আরেকটা কারখানায় (একই ভবনে জুতো তৈরির আরেকটা কারখানা) দেড় বছর কাজ করেছে, এবং এছাড়াও যখন ছোট ছিল তখন বিভিন্ন পরিবারে কাজ করত। নতুন কারখানায় তার কাজের চাপ খুব বেশি, তবে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে আগের কাজটির তুলনায় এই কাজটি সে বেশি পছন্দ করছে, কারণ এখানে তার বেতন আগের কারখানাটির বেতনের চাইতে বেশি, এবং এছাড়াও পুরানো কারখানায় তাকে অনেক বেশি ওভারটাইম কাজ করতে হত এবং বেতনও সময় মতো দেওয়া হত না।
২০২৩ সালের ১৩ই মার্চ তারিখে আশা বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাওয়া এবং তাদের ভবনের ছাদে বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলার অভিজ্ঞতা রেকর্ড করেছিল। এই দিনটি মোটামুটিভাবে আশার সাধারণ অন্য দিনগুলির মতোই ছিল, কিন্তু কখনও কখনও বন্ধুদের সঙ্গে সময় না কাটিয়ে সে তার সৎ-বাবার কারখানায় গিয়ে তার বিক্রি করার পলিথিন শুকিয়ে গুছিয়ে রাখতে সাহায্য করে, অথবা মাঝে মাঝে বাড়ির কাজে তার মাকে সহায়তা করে। অন্যান্য দিনগুলিতে সে এতো ক্লান্ত থাকে যে কাজের পরে সে শুধু ঘুমায়।
রমজানের সময় আশার কাজের সময়সূচীর পরিবর্তন হয়। সেই সময়ে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে ১৫ দিন রাত নয়টা পর্যন্ত ওভারটাইম কাজ করতে হয়। রমজানের সময় ওভারটাইমের সময়সূচীর মধ্যে শ্রমিকরা ইফতারের (রোজা ভঙ্গের জন্য সন্ধ্যাবেলায় বিরতি) জন্য শুধু এক ঘণ্টার ছুটি পায়।
“কখনও কখনও কাজের চাপ এতো বেশি থাকে যে আমি ক্লান্ত হয়ে পড়ি, মেজাজ খারাপ হয়ে যায় আর গা গুলোয়। অনেকক্ষণ কাজ করার পরে আমার পিঠে ব্যথা হয়। মাঝে মাঝে ভাবি যে আমি যদি পড়াশোনা করতে পারতাম তাহলে ভাল হত।”
আষাঢ়ের দিন
শিশুর অভিজ্ঞতা
সৎ-বাবা যখন বাড়িতে না থাকেন শুধুমাত্র তখনই আমার ভাল লাগে। বাড়িতে আমার সবচেয়ে ভাল লাগে যখন তিনি না থাকেন, আমি আমার যা ইচ্ছা তাই করতে পারি, যেমন আমার ফোনে মুভি অথবা টিকটক ভিডিও দেখতে পারি।
গবেষকদের অভিজ্ঞতা
আশা সকালে বাড়ি থেকে সাধারণত ৭.৪৫-এ বেড়িয়ে ৮টা থেকে কারখানায় কাজ শুরু করে। আমি তাদের পাড়াতে পৌঁছে আশাকে কল করে তার ঠিকানা জানতে চেয়েছিলাম, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমি তাদের বাড়ি খুঁজে পাইনি, তাই ঠিক করেছিলাম যে তার কারখানার বাইরে ৮টার সময় আমরা দেখা করব।
শ্রমিকদের চলাফেরা CCTV-এর নজরদারিতে আছে
শিশুর অভিজ্ঞতা
এখানকার ম্যানেজাররা আসলে বেশ ভাল, বিশেষত আমার সুপারভাইজার। তিনি সব সময়েই জানতে চান যে আমরা ভাল আছি কিনা আর আমাদের অর্থের কোনও দরকার আছে কিনা। আমি যখন প্রথম এখানে এসেছিলাম তখন এখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তিনি খুব সাহায্য করেছিলেন। এছাড়াও আমি শুনেছিলাম যে আজ আমাদের শাড়ি (প্রথাগত বাঙালী পোশাক) দেওয়া হবে, তাই আমি আজ খুব উত্তেজিত।
আমাদের কারখানার লোকজনদের মধ্যে আমি নিজেকে নিরাপদ মনে করি। আমরা পরস্পরের খেয়াল রাখি আর সম্মান করি, যার ফলে কাজের পরিবেশ খুব ভাল থাকে। সম্মান পাওয়া আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও আমি আগের চাকরিগুলিতে যে কাজগুলি করতাম তার তুলনায় এখানকার কাজ সহজ।
স্ট্র্যাপ সেলাই করায় আমি একটা ভুল করেছি। এর জন্য বিরক্ত লাগছে। এখন আমাকে এটা আবারও করতে হবে। এর জন্য কিছুটা সময় লাগবে, ফলে আমার টার্গেট পূরণ করতে কষ্ট হবে।
গবেষকদের অভিজ্ঞতা
সুপারভাইজারের সঙ্গে কিছুক্ষণ আলোচনা করার পরে আশার কাজ দেখার জন্য আমাকে অনুমতি দেওয়া হল। যখন এই আলোচনা চলছিল তখন আশাকে দেখে নার্ভাস মনে হচ্ছিল, তারপরে যখন সম্মত হওয়া গেল যে আমি থাকতে পারি তখন সে নিশ্চিন্ত হল।
আশা একটা উঁচু সিলিংয়ের বড় ঘরে কাজ করে। সেখানে অনেকগুলি পাখা আছে আর ঘরটা বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। আশা সেলাই মেশিন দিয়ে ব্যাগে কাঁধে ঝোলানোর স্ট্র্যাপ সেলাই করে। তিনটে সারিতে রাখা ৩৬টা বৈদ্যুতিক সেলাই মেশিনের মধ্যে একটা নিয়ে আশা কাজ করে। ব্যাগের বিভিন্ন অংশ সারা মেঝেতে ছড়িয়ে আছে। ঘরের চারপাশে ক্যামেরা লাগানো আছে। ঘরটিতে প্রায় ৪৫ জন মানুষ কাজ করছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৭০% প্রাপ্তবয়স্ক, আর কর্মীদের মধ্যে পুরুষ ও মহিলারা আছেন।
মনে হয় আশা খুব মিশুকে, সে সেলাই শুরু করার আগে এবং সেলাই মেশিন পরিষ্কার করতে করতে তার সহকর্মীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে। কর্মীরা আগামী শুক্রবারে যে চড়ুইভাতির আয়োজন করেছেন তা নিয়ে আশা বিশেষ উৎসাহী। চড়ুইভাতির দিন পরার জন্য সব মহিলা ও মেয়েদের প্রথাগত পোশাক দেওয়া হয়েছে।
আশা দুই ঘণ্টায় ৭৬টি ব্যাগের সেকশন সেলাই করে। সেই সময় সে একটা ভুল করে আর তাকে একটা স্ট্র্যাপ আবার বানাতে হবে। আশার দুশ্চিন্তা হল যদি ফ্লোর ম্যানেজার তা লক্ষ্য করেন তাহলে তিনি বকুনি দেবেন। এছাড়াও তার উদ্বেগ হল ভুলের কারণে তার উৎপাদনের হার কমে যাবে। প্রতি দুই ঘণ্টা অন্তর তার ফ্লোর ম্যানেজার এসে দেখে যান যে সে কয়টা স্ট্র্যাপ অথবা ব্যাগ সেলাই করেছে। ভুল সংশোধন করার জন্য যে সময় লাগবে সেই অনুপাতে তার বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়া হতে পারে। যদি আশা অনেকগুলি ভুল অথবা পরিবর্তন করে, তাহলে সময় পূরণ করার জন্য তাকে তার দুপুরের খাবারের বিরতি থেকে আধ ঘণ্টা দিতে হবে।
সকালে পরের দিকে আশার সুপারভাইজার তাকে জানালেন যে তিনি চেষ্টা করা সত্ত্বেও আশার সঙ্গে আমার থাকার জন্য কর্মকর্তাদের অনুমোদন আদায় করতে পারেননি। মনে হয় বহিরাগতদের কারখানায় স্বাগত জানানো হয় না। আমি শুধুমাত্র লাঞ্চের সময় পর্যন্ত থাকতে পারব। এর ফলে আশাকে বিপর্যস্ত লাগছিল।
আশার অভিজ্ঞতা
লাঞ্চের বিরতির আগে আমি কোনও কিছু খাওয়ার সুযোগ পাইনি, তাই এখন আমার খিদে লেগেছে।
খাওয়ার পরে আমার বেশ ভাল লাগছে।
আমি টিকটক ভিডিও দেখছি আর ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে চ্যাট করছি। এই ভিডিওগুলি এতো মজার।
হেঁটে কাজে যেতে আমার কোনও অসুবিধা হচ্ছে না কারণ রাস্তায় (বাড়ি থেকে কাজে যাওয়ার রাস্তা) এখন অনেক লোকজন আছে। কিন্তু আমাকে যখন ওভারটাইম কাজ করে রাত ৯.১০-এর পরে বাড়িতে ফিরতে হয় তখন আমার ভয় করে।
গবেষকদের অভিজ্ঞতা
দুপুরে খাবার খাওয়ার জন্য আশা বাড়িতে যাচ্ছে। কারখানা থেকে তার বাড়ি ১০ মিনিটের হাঁটা পথ। দিনের বেলা রাস্তাটা ভাল, কিন্তু ওভারটাইম কাজ করার পরে একা বাড়িতে ফিরতে সে নিরাপত্তাহীনতা বোধ করে আর ভয় পায়, যেমন রাত নয়টা অথবা দশটায় ফেরার সময়।
খাওয়ার পরে আশা ফোনে নানা অনুষ্ঠান দেখে, বন্ধুদের সঙ্গে করা তার একটা টিকটক সে আমাকে দেখালো।
কারখানায় ফেরার সময় তার ঘুম পায়।
ছাদ
শিশুর অভিজ্ঞতা
আমার আজকের কাজ শেষ হয়েছে। এখন আমি বাড়িতে ফিরতে পারব, তাই বেশ আনন্দ পাচ্ছি। আজ টার্গেট পূরণ করেছি। কাজেই কোনও চাপ নেই।
সাধারণত কাজের পরে আমি সোজা বাড়িতে ফিরে যাই, তবে হাতে সময় থাকলে মাঝে মাঝে আমার বন্ধুর বাড়িতেও যাই। কখনও কখনও, প্রধানত শুক্রবারে, আমি খালপাড়ে যাই (জেলার মধ্যে দিয়ে যাওয়া একটা বড় রাস্তার কাছে সরু একটা নদীর পাড়)। আমার সৎ-বাবা সেখানে কাছাকাছি কাজ করেন, আমি প্রায়ই সেখানে গিয়ে তার পলিথিন গুছিয়ে রাখার কাজে সাহায্য করি। আজ আমি CLARISSA গবেষকের সঙ্গে সেই এলাকা দিয়ে যাচ্ছি। মহিলা ও মেয়েদের জন্য এই এলাকাটা বিপজ্জনক। এখানে একটা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। এখান থেকে দূরে চলে যাওয়ার জন্য আমরা বাড়ি পরিবর্তন করেছিলাম। রাত্রিবেলায় জায়গাটা বিপজ্জনক। এখানে লোকেরা আর ছেলেরা মাদক নেয়। কয়েকটা ছেলে আমাদের হয়রান করছিল, তাই আমি খুব রেগে গিয়েছি। এই এলাকাটায় আমাকে অনেকবার আসতে হয়। আমার অস্বস্তি আর ভয় লাগে।
এই হল সেই জায়গা যেখানে একটা মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এই রাস্তাটা পার হওয়ার সময় সর্বদাই আমার শিরদাঁড়া দিয়ে ঠাণ্ডা স্রোত বয়ে যায়। এখানে আমার অস্বস্তি লাগছে।
গবেষকদের অভিজ্ঞতা
বিকেল ৫টায় আমি আশাকে নিয়ে ‘খালপাড়ে’ এলাম। সাধারণত এখানে সে বন্ধুদের সঙ্গে হাঁটতে আসে। এটা একটা দুর্গন্ধময় স্থান। খালের পানি এতোটাই দুষিত যে তা কালো হয়ে গিয়েছে, কিন্তু এই এলাকায় যেহেতু খালি কোনও জায়গা নেই, তাই মানুষজনের হাঁটার জন্য একমাত্র স্থান হিসাবে ‘খালপাড়’ বিখ্যাত।
আশা আমাকে বলছে যে কাছেই একটা মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল। খুনটা হওয়ার পরে, আশার পরিবারের মতো অন্যান্য যে পরিবারগুলি খুব কাছাকাছি বাস করত, তারা অন্যত্র চলে গিয়েছিল, এবং তারপরে সেই এলাকার সব মেয়েদেরই তার পিতা-মাতা এই এলাকায় আসতে নিষেধ করেছিলেন। অপরাধের জায়গাটা এখন CCTV-এর নজরদারিতে আছে।
এই জায়গাটায় অল্পবয়সী লোকেরা আমাকে আর আশাকে হয়রানী করছিল, যা আমাদের নার্ভাস করে দিয়েছিল, তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা সেই এলাকা থেকে চলে এসেছিলাম।
ছাদে ফুটবল খেলা হচ্ছে
শিশুর অভিজ্ঞতা
সারা দিন অনেকক্ষণ কাজ করার পরে বাড়িতে ফিরলে বেশ আরাম হয়। এখন আমি কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারব,কাজেই বেশ আনন্দ হচ্ছে আর স্বস্তি বোধ হচ্ছে।
বাতাসটা ভাল লাগছে। সাধারণত আমি ছাদে বেশিক্ষণ থাকি না, কিন্তু আপনি সঙ্গে থাকাতে আমি নিরাপদ বোধ করছি। আমি আসলে খুব ভূতের ভয় পাই।
আমি ফুটবল খেলতে ভালবাসি সাধারণত আমি ছোটদের সঙ্গে খেলি। আমি দারুণ বোধ করছি।
গবেষকদের অভিজ্ঞতা
আশা আর তার পরিবার একটা তিনতলা ভবনের একতলার একটি ঘরে থাকে। রান্না করার জন্য তারা একটা খোলা জায়গায় অন্যদের পাশাপাশি রান্না করে, এছাড়াও তিনটি পরিবারের ব্যবহারের জন্য দুটি গোসলখানা আছে। পরিবারটির ঘরে বাইরের আলো বাতাস ঢোকে না, জানলা না থাকায় ঘরের ভিতরটা গরম থাকে। পরিবারটির আসবাবপত্রের মধ্যে আছে একটি ওয়ারড্রব, একটি ক্যাবিনেট, একটা মিট র্যাক আর একটা রেফ্রিজারেটর। একটা বাইসাইকেলও আছে, যেটা আশার ছোট ভাই চড়ে। তাদের ঘরের এক কোণে একটি তিন-অ্যান্টেনার রাউটার রাখা আছে। TV দেখার পরিবর্তে পরিবারটির বিনোদন হয় দুটি স্মার্টফোনের মাধ্যমে।
ছাদে তিনটি বাচ্চা ফুটবল খেলছে। আশা আর তার বন্ধু তাদের সঙ্গে যোগ দিয়ে কিছুক্ষণ ফুটবল খেললো। সেই সময়ে তাকে উচ্ছল আর খুশি দেখাচ্ছে। ছাদটাই হল একমাত্র স্থান যেখানে সে একটু শান্তি খুঁজে পায় আর হাওয়া খেতে পারে। সন্ধ্যা ৭টার পরে সে আর ছাদে যায় না, কারণ তখন ভবনটির মালিকের ছেলে তার দলবলের সঙ্গে সেখানে মাদক সেবন করে আর মদ খায়।
আশা অল্প সময়ের জন্য ছাদে থাকে। তারপরে সে তার প্রেমিকের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলে। তারপর রাত ৮টা পর্যন্ত সে বন্ধুর সঙ্গে টিকটক দেখে।