শিশুদের দিন সম্পর্কে গল্প

রামিনা, ১৭ বছর বয়সী মেয়ে

শিশুদের আসল নাম সুরক্ষিত
১৭ বছর বয়সী রামিনা একটা চামড়ার কারখানায় কাজ করে। তার কাজের সময় সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হলেও তাকে প্রতিদিনই ওভারটাইম কাজ করতে হয়। অধিকাংশ দিনই রামিনা রাত ১২টা পর্যন্ত কাজ করে,আবার কোনও কোনও দিন রাত ২টা পর্যন্তও কাজ করতে হয়। সাধারণত বাড়ি আর কাজের জায়গা ছাড়া রামিনা অন্য কোথাও যায় না।

রামিনার জীবনের কথা

রামিনা তার বাবা, ছোট ভাই আর বড় বোন ঢাকার গজমহলে বাস করে। তাদের মা তাদের গ্রামের বাড়িতে থাকেন। তার বাবা নির্মাণ শিল্পে কাজ করেন। তার ভাইরা সবাই জুতো আর চামড়ার কারখানায় কাজ করে। তার দিদি কিছু কিছু সেলাইয়ের কাজ করে আর বাড়ির কাজকর্ম করে।

২০২৩ সালের ৯ই মার্চ তারিখে রামিনা বাড়ি থেকে তার কর্মস্থল (তার বাড়ি থেকে কয়েক মিনিট দূরে) স্থানীয় একটি জুতোর কারখানায় যাওয়া এবং অভিজ্ঞতা রেকর্ড করেছিল।

নিজের পাড়ার রাস্তায় রাত্রিবেলা রামিনা নিজেকে নিরাপদ বোধ করে না। রাত্রিবেলা যাতায়াত করার সময় তার সঙ্গে অন্যদের থাকতে হয়। রাস্তা থেকে একটা ছেলেকে অপহরণ করার গুজব শোনার পরে তার নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তীব্র হয়।

Sleeping at work

“আমি ভোর থেকে মাঝ রাত পর্যন্ত কারখানায় থাকি। তাই, সত্যি বলতে কি, এটাই আমার আসল বাড়ি, তাই না?”

Chatting and working in the factory

কারখানায় কাজের মাঝে কথাবার্তা বলা

দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে হয় বলে রামিনা সাধারণত বাড়ি আর কাজের জায়গা ছাড়া অন্য কোথাও যায় না।

এমনকি, সে দোকানেও যায় না (তার বোন তার জন্য জামাকাপড় কিনে আনে)। বাড়ি থেকে কর্মস্থলে যাওয়া হল তার জীবনের সবচেয়ে সাধারণ যাত্রা। কোনও বিরল ক্ষেত্রে সে যদি ছুটি পায় তাহলে সে বন্ধুর সঙ্গে বাংলাদেশী স্ট্রিট ফুড খেতে যায়।

“কাজটা খুবই ঝুঁকির আর কঠিন; সব কাজের মধ্যে আমি এটাকেই সবচেয়ে কঠিন বলে মনে করি। এটা খুবই কঠিন কাজ। এটা আমি একদমই করতে চাই না।

Heavy base to beat leather on

ভারী বেস দিয়ে চামড়ায় আঘাত করা

Cutting leather

চামড়া কাটা

রামিনা তার কর্মস্থলে

রামিনার কাজের সময় সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হলেও তাকে প্রতিদিন আবশ্যিকভাবেই ওভারটাইম কাজ করতে হয়। অধিকাংশ দিনই রামিনা রাত ১২টা অথবা ২টা পর্যন্ত কাজ করে। শুক্রবার তাকে বেলা ১টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। রামিনা সাধারণত জুতোর উপরের অংশে কাজ করে, যার মধ্যে থাকে চামড়া কাটা, সেলাই করা এবং অন্যান্য কাজ। – এই সবই হাতে করতে হয়।

রামিনা নিজের কর্মস্থলকে নিরাপদ বলে মনে করে, কারণ তার পুরুষ সহকর্মীদের তার ভাইদের মতো মনে হয়। সে মনে করে তার নিজের ভাইরা বাড়িতে তাকে যা শেখাবে, তার সহকর্মীরা কর্মস্থলে তাকে তাই শেখায়। তারা মজার মজার কাণ্ড করে তাকে হাসায়। কাজ শেষ করে মাঝ রাতে যখন সে বাড়িতে ফেরে, তখন তার সঙ্গে তারা থাকে। বাড়িতে সামান্য কারণেও তার ভাইরা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, কিন্তু কারখানায় ছেলেরা তাকে হয়রান করে না অথবা প্রেম নিবেদন করে না। শুধুমাত্র যখন কারখানার মালিক তাদের উদ্দেশ্য চিৎকার করেন তখন তার ইচ্ছা হয় কাজে ইস্তফা দিয়ে বাড়িতে ফিরে যেতে।

বাড়িতে নিজের ইচ্ছামতো কিছু করার স্বাধীনতা রামিনার নেই। যেমন টিক টক ভিডিও তৈরি করা অথবা নিজের ফোনে কিছু দেখা, তাই দুপুরের খাবারের বিরতির সম্পূর্ণ সময় সে বাড়িতে না থেকে বরং আগে আগেই কারখানায় ফিরে যায়।

Relaxing at home in the morning

সকালবেলায় বাড়িতে আরাম করা

“আমার ভাগ্য খুব ভাল যে আমার কোনও আঙুলই যন্ত্রটার নিচে যায়নি, গেলে আঙুলটা কাটা যেত। যন্ত্রটা একটা ব্লেডের মতো। আমার কিছুটা ভয় করে, কিন্তু আমাকে কাজ তো করতেই হবে।”

রামিনার দিন

০৮.০০
বাড়িতে

শিশুর অভিজ্ঞতা

আমার শিফট শুরু হয় সকাল ৯টায়। আমি ৮:২০ নাগাদ ঘুম থেকে উঠে পড়ি। আজ আমাকে আরও আগে উঠতে হয়েছে, তাই এখন একটু ঘুম ঘুম লাগছে। আমার কাজ সাধারণত মাঝ রাতে শেষ হয়। অধিকাংশ সময়েই রাত ১২:৩০এর পরে আমি বাড়িতে ফিরি। যদি কাজের চাপ সত্যিই খুব বেশি থাকে, তাহলে আমার ঘুম ভাল হয় না। আমি এত দেরিতে বাড়িতে ফিরি যে অধিকাংশ সময়েই আমার ক্ষুধা থাকে না, কিন্তু তবুও আমি ঝোল-ভাত অথবা রাতের জন্য যা রান্না করা হয় তাই খাওয়ার চেষ্টা করি আর গোসল করি, তা না হলে কারখানার একটা বদ গন্ধ আমার গায়ে লেগে থাকে যা যেতেই চায় না। গোসলখানাটা সব সময়েই দুর্গন্ধময় আর নোংরা থাকে। যখন খুব প্রয়োজন হয় শুধুমাত্র তখনই আমি গোসলখানায় যাই।

শুধুমাত্র সকালবেলাতেই আমি একটানা কিছুটা সময় পাই যখন বসে থাকতে পারি, আরাম করতে পারি আর আমার ফোনে ভিডিও (অধিকাংশই টিকটক) দেখতে পারি। কাজের সময়েও আমি আমার ফোন কাছে রাখি, আর যখন একটু ফাঁক পাই তখন ভিডিও দেখি।

সাধারণত সকালের নাস্তা আমি বাড়িতে করি না। সকালের নাস্তার জন্য আমি একটু পরোটা (ভাজা চ্যাপটা রুটি), সিঙ্গারা (আলু ভর্তি করা ভাজা নাস্তা) অথবা বান কিনে নিই। আমার হেলপার (কারখানায়) আর আমি সাধারণত একসঙ্গে সকালের নাস্তা করি।

 

গবেষকদের অভিজ্ঞতা

রামিনাকে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়তে হয়েছে।তার মেজাজ খারাপ কারণ সে বেশিক্ষণ ঘুমাতে পারেনি। তার জন্য আমার খারাপ লাগছিল, কারণ সে অনেকবার বলেছে যে সে যদি আরও মিনিট ২০ বেশি ঘুমাতে পারতো তাহলে ভাল লাগত। তার বাড়িতে ভালভাবে বাতাস চলাচল করে না, তাই ঘুমাতে হয়তো অসুবিধাহয়। , একই ঘরে পরিবারের অন্যরা থাকায় ঘরটিতে দম বন্ধ করা অবস্থা মনে হয়।

আমি প্রায় এক ঘণ্টা রামিনাদের বাড়িতে ছিলাম, সে আর তার বোন আমার খাতিরদারি করছিল। রামিনা আমাকে জানাল যে খাতিরদারির জন্য পাড়ায় তাদের পরিবারটির খ্যাতি আছে। তাদের বাড়িতে কেউ এলে কিছু না খেয়ে অথবা চা না খেয়ে চলে যান না।

A cup of tea

এক কাপ চা

৮.৪০
চায়ের দোকানে

শিশুর অভিজ্ঞতা

এই দোকানটায় চা খেতে আমার ভাল লাগে। বাড়িতে আমরা চা বানাই না। আপনার মতো কোনও অতিথি এলে চা নেওয়ার জন্য আমার ভাই অথবা আমি এই চায়ের দোকানটায় আসি। প্রতিদিন আমি সাত-আট কাপ চা খাই। সবাই এই চায়ের দোকানে টিভি দেখতে আসে, তাই সবসময়েই এখানে ভিড় থাকে। তবুও দিনের বেলায় চায়ের জন্য অপেক্ষা করতে অসুবিধা হয় না।

গবেষকদের অভিজ্ঞতা

পাড়ায় এই চায়ের দোকানটা রামিনার বেশ পরিচিত জায়গা। সে দোকান মালিকের সঙ্গে সাধারণ কথাবার্তা বলে, যা থেকে বোঝা যায় যে তাদের মধ্যে প্রতিবেশীদের মতো ভাল সম্পর্ক আছে। তাড়াতাড়ি থাকায় সে অন্য খরিদ্দারদের সঙ্গে আড্ডা মেরে সময় নষ্ট করে না।

Working with a skiving machine

স্কিভিং যন্ত্রে কাজ করা

০৯.০০
কাজের সময়

শিশুর অভিজ্ঞতা

গরম বাড়ছে আর আজ আমাদের কর্মীও কম আছে। কাজেই কাজের চাপ খুবই বেশি। এই ধরণের দিনগুলি আমার মোটেই ভাল লাগে না। এখানে কাজ করা মজার, তবে শুধুমাত্র যেদিনগুলিতে কাজের চাপ কম থাকে। আমাকে আজ ঝটপট কাজ করতে হবে আর অন্যদের কাজও আমাকে করতে হবে। এইগুলির জন্যই খারাপ লাগে। আমাকে একটা নির্দিষ্ট কাউন্টার সারা দিন একটা যন্ত্রের মতো কাজ করতে হয়।

আমি যদি একটানা একটা ভারী কাঁচি দিয়ে চামড়া কাটতে থাকি তাহলে ব্যথা হওয়া তো স্বাভাবিক। আমার হাতে সব সময়েই ব্যথা থাকে। চামড়া কাটতে অনেকটা শক্তি লাগে, তাই ইতিমধ্যেই আমি কিছুটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। প্রায় সবসময়েই আমার হাতে ব্যথা থাকে। কিন্তু তবুও এখানে কাজ করতে আমার ভাল লাগে। আশে পাশে লোকজন থাকলে আমার ভাল লাগে। এখানে যার সঙ্গে ইচ্ছা হয় তার সঙ্গে আমি কথা বলতে পারি।

দুপুরবেলা লাঞ্চের বিরতিতে আমি বাড়িতে খেতে যাই, খাওয়ার পরে চুল আঁচড়াই আর তারপরে কারখানায় ফিরে আসি, সবই করি ২৫ মিনিটের মধ্যে। তারপর বাকি ৩০ মিনিট আমি বন্ধুর সঙ্গে আমার ফোনে টিকটক দেখি।

তারপরে আমি একটি স্কিভিং যন্ত্রে কাজ করছি (স্কিভিং হল চামড়ার পুরুত্ব কমানোর একটি প্রক্রিয়া, বিশেষ করে এমন জায়গাগুলিতে যেগুলি বাঁকাতে অথবা ভাঁজ করতে হবে এবং যা অবশ্যই নমনীয় হতে হবে)। এটা আমার কাছে একটা সহজ কাজ। আপনাকে শুধু যন্ত্রটির পিছনে বসে থেকে যন্ত্রটি চালু করতে হবে আর তারপরে চামড়ার টুকরোর পাশগুলি ভাঁজ করতে হবে। কিন্তু আমাকে সতর্ক থাকতে হবে, কারণ এই চাকাটা খুব জোরে ঘুরতে থাকে, তাই কোনও কারণে আমি যদি অন্যমনস্ক হই তাহলে আমার আঙুল কাটা যাবে। একবার টুকরোগুলোর পাশগুলি যখন আমি ভাঁজ করছিলাম তখন আমার হাতের তালু কেটে গিয়েছিল আমার ভাগ্য খুব ভাল যে আমার কোনও আঙুলই যন্ত্রটার নিচে যায়নি, গেলে আঙুলটা কেটে গিয়ে হাত থেকে আলাদা হয়ে যেত। যন্ত্রটা একটা ব্লেডের মতো। আমার কিছুটা ভয় করে, কিন্তু আমাকে কাজ তো করতেই হবে। আর এটাতে কাজ করতে আমার ভালও লাগে, কারণ যন্ত্র ব্যবহার করলে কাজ বেশি করা যায়।

পরে আমি একটা ভারী হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে চামড়ায় ভাঁজ করি। আমি এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে এই কাজটা করি। অনবরত হাতুড়ি মারতে মারতে আমার হাত অবশ হয়ে যায়। খুব ব্যথাও করে। কিন্তু থামার উপায় নেই। হাত যতই ব্যথা করুক না কেন আমাকে আমার কাজ শেষ করতেই হবে। আপনি দেখতেই পাচ্ছেন যে হাতুড়িটা কত ভারী। টুকরোগুলোর পাশ সমান করার জন্য আপনার শরীরের সমস্ত শক্তির দরকার হবে। কখনও কখনও আমার আঘাত লাগে। যে কোনও সময়েই আমার আঙুলগুলো গুড়ো হয়ে যেতে পারে।

গবেষকদের অভিজ্ঞতা

রামিনা দেখেছিল যে তার কয়েকজন সহকর্মী অনুপস্থিত আছেন, দেখেই তার মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল। কোনও কোনও সহকর্মী কিছু কিছু কাজে তার সহায়তা চাইছিল, কিন্তু বিরক্ত না হয়ে সে তাদের সহায়তা করছিল। সিলিং ফ্যান আর টেবিল ফ্যান থাকা সত্ত্বেও কারখানার ভিতরে রামিনার অসহ্য গরম লাগছে। ঘরটা অগোছালো আর কড়া দুর্গন্ধের জন্য রামিনা আর তার সহকর্মীর সবসময়েই কাশতে থাকে।

রামিনা আমাকে বলেছিল যে অসতর্ক থাকলেই তার আঙুল কেটে যায়। কিন্তু সে যে একজন নাবালিকা এবং তাকে যে ভারী কাঁচি দিয়ে চামড়া কাটতে হয় তা নিয়ে সে ভাবেই না। আমি যখন চাইলাম তখন সে আমাকে কাঁচিটা দিল। আমি কয়েকটা টুকরো কাটার চেষ্টা করলাম। কাজটা বেশ কঠিন। আমার হাত এখনও ব্যথা করছে, আর একটা টুকরো কাটতে আমার বেশ কয়েক মিনিট লেগেছিল, যা সে কয়েক সেকেন্ডে কাটে।

পরে রামিনা স্কিভিং যন্ত্রে কাজ করছে। এই যন্ত্রটা খুবই বিপজ্জনক। চাকা ঘুরতে থাকার সময় ঘষা লেগে আগুনের ফুলকি ছিটকে আসে আর চাকাটা খুব জোরে ঘুরতে থাকে। এটা আমার কাছে স্পষ্ট যে এই ধরণের যন্ত্র নিয়ে কোনও শিশুর কাজ করা উচিৎ নয়।

চামড়ার ভাঁজগুলিকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রামিনা যখন সমান করছে, তখন আমি লক্ষ্য করছি যে তার কতোটা কষ্ট হচ্ছে। এতে তার শরীরের সমস্ত শক্তির ক্ষয় হয়। সে একটা যন্ত্রের মতো কাজ করতে থাকে যতক্ষণ না তার কাজ শেষ হয়। দীর্ঘ সময় ধরে এই কাজ করতে থাকলে সে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে অথবা স্থায়ী ব্যথা হতে পারে।

কারখানায় রামিনা যে সমস্ত কাজ করে সেগুলির মধ্যে ভাঁজ করা হল সবচেয়ে কঠিন আর ঝুঁকির কাজ। হাতুড়িটা খুব বেশি লম্বা নয় তবে ভারী। সে যখন হাতুড়ি মারা শুরু করেছিল, তখন আর একটু হলেই তার আঙুল প্রায় গুড়ো হয়ে যেত। তাকে একটু অসতর্ক বলে মনে হয়েছিল কিন্তু কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। যদিও আমার মনে হচ্ছে যে কোনও সময়েই দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

০২.০০
কাজ থেকে বাড়িতে ফেরা আর ঘুমাতে যাওয়া

শিশুর অভিজ্ঞতা

প্রতিদিন যে রাস্তা দিয়ে আমি বাড়ি থেকে কাজে যাতায়াত করি সেটা আমার নিরাপদ মনে হয় না। লোকে বলে যে মেয়েদের জন্য এই রাস্তাটা নিরাপদ নয়, আজেবাজে ছেলেরা এখানে ঘোরাঘুরি করে। আমি কখনও এখানে খারাপ কিছু হতে দেখিনি বটে তবে আমার অবশ্যই ভয় করে। অন্ধকার হয়ে গেলে আমি একা এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি না।

আমার শিফট শেষ হয়ে গেলে কখনও কখনও আমার ভাইরা আমাকে নিয়ে যেতে আসে, অথবা আমার কোনও পুরুষ সহকর্মী আমাকে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যায়।

রাত্রিবেলা আমার খুব ভয় করে। রাত্রিবেলা আমি কখনও একা হেঁটে বাড়িতে ফিরি না। শুধুমাত্র একবার আমাকে একা ফিরতে হয়েছিল। আমার ভাইয়েরা আমার কল ধরেনি আর আমার সহকর্মীদের শিফট তখনও শেষ হয়নি। কাজেই আমার আর কোনও উপায় ছিল না। আমার এতো ভয় করছিল, যদিও আমাদের বাড়ি হল দুই তিন মিনিট দূরে। রাস্তার আলো থাকলেও গাঢ় অন্ধকার ছিল। আমি একজন মানুষকেও দেখতে পাইনি। আমি কাঁদছিলাম। আমি ভাবছিলাম যে আমার খুব খারাপ কিছু একটা হতে যাচ্ছে। আমি ভূতের ভয় পাই আর আমার বুক ধুকপুক করছিল।

গবেষকদের অভিজ্ঞতা

রামিনা সাধারণত প্রায় মাঝ রাতে বাড়িতে পৌঁছায় যখন অন্য সবাই ঘুমিয়ে থাকে। বাড়িতে ফিরে সে কারোর সঙ্গে কথা বলতে পারে না, তাই সে একাকীত্বে ভোগে। সে ওভারটাইম কাজ করে আর অনেক রাতে বাড়িতে ফেরে।

এই বিশেষ দিনটিতে সে রাত ২টা পর্যন্ত কাজ করেছিল। তারপরে বাড়িতে ফিরে সে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমাতে গিয়েছিল।

রামিনার যাত্রা অন্বেষণ করুন